স্ক্র্যাচ করার পর পণ্য কিনতে হবে কোম্পানীর নির্ধারিত দামে, সাথে সাথে জমা দিতে হবে ১৮০০টাকা, এতে বেশি দামে নিম্নমানের পণ্য ধরিয়ে দিয়ে সটকে পড়ছে একটি প্রতারক চক্র, আবার কোনটির অফিসের মিলছে না অস্বিত্ব। এলএম মার্কেটিং ডিসকাউন্ট প্যাকেজ অফারের ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামের সহজ সরল নারী,পুরুষরা।
ডিসকাউন্ট অফারের লোভ ছেড়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলছে সচেতন মহল।
জামতৈল গ্রামের বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী নূপুর আফরিন জানান, কিছুদিন আগে এই চক্রটি আমার মা ও ভাবীকে বোকা বানিয়ে তিনশ টাকা নিয়ে যায়। মোটরসাইকেলের লোভ দেখিয়ে বিকাশে আগে টাকা পাঠাতে বলে, পণ্য হোম ডেলিভারি দেয়ার কথা জানায়। প্রতারক চক্র বুঝতে পেরে আম্মুকে টাকা পাঠাতে দেইনি । কয়েক মাস আগে প্রতিবেশী এক চাচীকে বোকা বানিয়ে ৮টা কার্ড বিক্রি করেছিল ওরা, চাচী এখন ময়মনসিংহ থাকে।
গৃহবধূ সাদিকা আফরিন জানান, আমার মা বছরখানেক আগে এই টিকেট কিনেছিলো, স্ক্র্যাচ করে একটি টিভি পাই সেটা সাত হাজার টাকায় কিনে আনতে হয়েছে, পরে মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি টিভির প্রকৃত দাম পাঁচ হাজার টাকা। টিভিটা অল্প কিছুদিন পর নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের গ্রামের বাদশা স্যার একই প্রতারনা শিকার হয়েছে। পোড়াবাড়ী ফকিরবাড়ী ব্রীজের সাথে অফিস নিয়েছিল, পরে শুনতে পাই অফিস ভাড়া না দিয়েই তারা পালিয়েছে।
হেমনগর রোডের বাসিন্দা মিজানুর রহমান আশিক জানান, মধুপুরে আমার এক মহিলা আত্মীয়ের কাছে এই কার্ড বিক্রি করা হয়েছে। অফিসের ঠিকানা দেয়া আমাদের হেমনগর রোডের শাহী জামে মসজিদ সংলগ্ন। অথচ এখানে এই অফিসের কোন অস্বিত্ব নাই। গতকালও একজন ভুক্তভোগী এদের খুঁজতে এসেছিল। এরা মূলত প্রতারক চক্র।
গোপালপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আঙ্গুর বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমি প্রথম শুনলাম এগুলো মূলত হায় হায় কোম্পানি। আমি খোঁজ নিতেছি অস্তিত্ব পেলে আইনি পদক্ষেপ নিবো, গোপালপুরে এদের ব্যবসা করতে দেয়া হবেনা। ডেসটিনিসহ অন্য এমএলএম এর প্রতারনা দেখে গ্রাহকের শেখা উচিত, অফারের ফাঁদে পা না দিয়ে শোরুম থেকে পণ্য কিনলে সঠিক মান ও বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়া যায়।
গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, এই ধরনের অভিযোগ আমি এখনো পাইনি, ভুক্তভোগী কেউ থাকলে থানায় পাঠিয়ে দেন ব্যবস্থা নিবো।
অল্প টাকার জন্য ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করতে আগ্রহী নয় জানালে, স্ক্র্যাচ কার্ডের ছবি পাঠালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকার নবাবপুর রোডের এলএম মার্কেটিং ডিসকাউন্ট প্যাকেজ অফার নামে নির্দিষ্ট ঠিকানা ও ফোন নাম্বারবিহীন স্ক্র্যাচ কার্ডের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ১২৫৭৮০৬ লেখা।
অপর পৃষ্ঠায় স্থানীয় এজেন্টের দুটি নাম্বার দেয়া থাকলেও এই নাম্বারে ০১৭৫০২০৫৮৩৪ বারবার কল করে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া গেছে, অপর আরেকটি নাম্বারে ০১৭৯২০৯**১১ ফোন দিলে শিহাব নামের একজন রিসিভ করে জানান, আমার সীমকার্ড ঢাকা থেকে দুইমাস আগে হারিয়েছিল, গতকাল রিপ্লেস করেছি আমি এসবের কিছুই জানি না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে এই চক্রের কাছে প্রতারনার কথা জানাচ্ছেন অনেকেই।
0 মন্তব্য(গুলি):