সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪

গোপালপুরের সিয়াম ইউটিউব দেখেই জেট বিমান বানালেন

মো. রুবেল আহমেদ

শুধুমাত্র ইউটিউব দেখেই যুদ্ধ বিমানের আদলে রিমোট কন্ট্রোল বিমান বানিয়ে এবং উড়িয়ে, সবাইকে চমক  দেখিয়েছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হাট বৈরানের বাসিন্দা কৃষক হাবিবুর রহমানে পুত্র মো. সিয়াম (১৫). সে স্থানীয় সুতি ভিএম পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার ১০ম শ্রেণীর ছাত্র।

জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই কারিগরি কাজের প্রতি ব্যাপক ঝোঁক মো. সিয়ামের। পিতার মোবাইল দিয়ে ইউটিউবে বিমান বানানো দেখেই ইচ্ছা জাগে বিমান বানানোর। ৫বছর ধরে এসব নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, সে অনুযায়ী অনলাইন শপের মাধ্যমে এবং সশরিরে ঢাকা থেকেও যন্ত্রপাতি কিনে আনেন টিফিনের বাঁচানোর পয়সায় । এমন কাজে উৎসাহ দেখে তার বাবাও আর্থিক জোগান দিতে থাকে। ককসিট, মোটর, পাখা ও কয়েকটি সার্কিট ব্যবহার করে, আমেরিকান যুদ্ধ বিমান এফ২২ র‍্যাপ্টরের আদলে বানানো বিমানটির নাম দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু এফ২২ র‍্যাপ্টর। বিমানটি নিয়ে রবিবার উপজেলায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা- ২০২৪ এ অংশ নিতে হাজির হলেও, বিদ্যালয়ের মাধ্যমে আগে থেকেই নাম না দেয়ায় প্রতিযোগিতায় জায়গা হয়নি তার। পরবর্তীতে গনমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানালে, প্রতিযোগিতায় নাম না উঠলেও; উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিমানটি শুধুমাত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়।
মো. সিয়াম জানান, পর্যাপ্ত অর্থ সহায়তা পেলে কৃষি কাজে ব্যবহৃত ড্রোন বানানোসহ, ক্যামেরা লাগিয়ে শতমাইল দূরে নজরদারি বিমান বানিয়ে দেশকে সহযোগিতা করতে পারবেন। সরকার সুযোগ করে দিলে যুদ্ধ বিমান বানানোর কাজে সহযোগিতা করে দেশকে এগিয়ে নিতে চান। বিমানটি বানানোর পর বাড়ির আঙ্গিনায় সাময়িক উড়ানো হলেও,গবেষণার জন্য উড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেতেও সহযোগিতা কামনা করেন। কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক কাজে পারদর্শীতার কথা অনেক আগেই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে জানিয়েছেন, তিনি তাকে অগ্রাহ্য করে এড়িয়ে গেছেন। ঐ শিক্ষক কতৃক মেধা অবমূল্যায়নের কারনেই, বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা- ২০২৪ এ স্থান পাননি।

সিয়ামের পিতা হাবিবুর রহমান বলেন, আমি কৃষক মানুষ এতো কিছু বুঝিনা। ওর এসব কাজের প্রতি আগ্রহ দেখে টাকা চাইলে চেষ্টা করতাম টাকা দিতে। সরকার যদি ওরে সহযোগিতা করে ও ভবিষ্যৎ এ দেশের কাজে লাগায় এটাই আমার চাওয়া।

সুতি ভিএম পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আতিকুর রহমান বলেন, সিয়াম এব্যাপারে আমাকে আগে কিছু জানায়নি। আজকে ওর মেধা দেখে আশ্চর্য হয়ে গেছি। ওর প্রতিভার কথা এমপি ও ইউএনও মহোদয়কে জানাবো। আজ থেকে ওর গবেষণায় যা দরকার হবে বিদ্যালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হবে এবং আর্থিক সহায়তার জন্য ইউএনও মহোদয়কে অনুরোধ করবো।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জুলফিকার হায়দার বলেন, গ্রামের মানুষ হলেও সিয়ামের প্রতিভা দেখে আমি বিস্মিত, ওর বানানো জেট বিমানটি চমৎকার লেগেছে। নিজের টাকায় এরকম একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে ও যে সার্থক হয়েছে এটি আমার কাছে আজব লেগেছে ‌। লোকাল প্রশাসনের সাথে কথা বলে ওকে আর্থিক সহায়তা করার চেষ্টা করবো।



SHARE THIS

Author:

সঠিক তথ্য পেতে সবসময় সমাবেশ ডটকমের সাথে থাকুন।

0 মন্তব্য(গুলি):